শেষ কর্মদিবস
মাথার তার গুলো রাস্তার মোড়ে মোড়ে বৈদ্যুতিক পোলের উপরে থাকা ডিস লাইনের তারের মত হবলংগের বাজার হয়ে গেছে। এখন আর মাথা ঠিকঠাক কাজ করছে না। লেখালেখি চাংঙ্গে তুলে রেখেছি। সহস্রবার মন চাইলেও মোবাইলের কিবোর্ড চাপার মত শক্তি পাচ্ছি না। তাই ভাবলাম যাই একটু খোলা আকাশের নিচে প্রকৃতির কাছাকাছি হই। চার দেওয়ালের ভিতর বালিশে মাথা ঠেকে আর কতটুকুই বা মগজ হতে গলধকরণ করা যায়। একটু সবুজের মাঝে গিয়ে পন্ডিতের ভাব ধরতে পারি কিনা। প্রকৃতি নাকি মানুষকে ভাবতে শেখায়, ভালোবাসতে শেখায়। তাই বসে এদিক সেদিক না তাকিয়ে অফিস রুমের বাইরে গিয়ে বাগানের মধ্যে বসে পরলাম। বাগানে আমাদের বসার জন্য সুন্দর দুটি টেবিল আছে। অবসরে সেখানে কিছুটা আড্ডা সাথে চা কফি পান করার জন্যই মূলত টেবিল দুটো বসানো।
সেখানে বসে ভাবতে শুরু করলাম কোথায় থেকে শুরু করা যায়। ভাবতে ভাবতেই লক্ষ করলাম কয়েকদিনের বৃষ্টিতে প্রায় মৃত ঘাস গুলো তাদের জীবন ফিরে পেয়েছে। আসল রূপে ফিরে গিয়েছে। গাছ পালা ফল ও ফুলের গাছ গুলো যেন মনে হচ্ছে তারা তাদের যৌবন ফিরে পেয়েছে।
আসলে প্রকৃতি যখন তার নিজস্ব রুপে ফিরে আসে তখন উপভোগ করার মত হয়। প্রকৃতির সেই রুপের সাথে তাল মিলিয়ে চলে অন্যান্য পশু পাখিরাও। বিভিন্ন ধরনের পাখিরা সেই প্রকৃতির সাথে খেলা করে। প্রকৃতির এমন রুপ আর পাখিদের খেলা উপভোগ করতে করতেই হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো। ফোনের স্কিন জুরে বড় বড় ফোন্টে ভেষে উঠলো বউ লেখাটি। রিসিভ করেই বললাম আকাশ হইতে বর্ষনের ফলে প্রকৃতি তার নিজস্ব রূপ ধারণ করিয়াছে। মাটিতে ঘাষ গুলো তোমার মত সুন্দরীর চরন ছোঁয়া পাওয়ার জন্য জন্য লজ্জায় টসটসে সবুজ রংয়ে রঙ্গায়িত হইয়াছে।
ওপাশ থেকে বাস কারো, বহুত হয়া গেয়া। তুমি কখন আসবে? তোমার না বাজার করে আজ দ্রুত আসার কথা ছিল। তব্দা খায়ে তরিঘরি করে পকেট হতে লিস্ট বার করে দেখে মাথা চক্কর দেওয়া অবস্থা। অফিসে আসার সময় বাজারের লিস্ট হাতে গুজেই রওনা দিয়েছিলাম। লিস্টের সিরিয়াল কতদূরে ঠেকেছে তা দেখার প্রয়োজন তখন মনে না করলেও এখন নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে। বাজার সময় মত করে বাসায় না পৌছালে কপালে নিচ্ছিত শনি আছে।
অফিসের আজকেই শেষ কর্মদিবস। টানা নয়দিন ছুটি। সবার জন্য অফিস একটি নরক যন্ত্রণার জায়গা হলেও আমার কাছে ভালোলাগার মত একটি জায়গা। ছুটির এই কয়দিন অবশ্যই অফিস মিস করবো। সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতর এর শুভেচ্ছা। ঈদ বয়ে আনুক আপনাদের ও আপনাদের পরিবারে অনাবিল আনন্দ।