আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

ভাষার জন্য লড়াই করেছে এমন এক জাতির কথা বলবো আজ ।নিজের মাতৃভাষাকে মায়ের মতন করে আঁকড়ে রাখতে লড়াই করেছে সেই বাঙালি জাতির আবেগে গাঁথা কথা বলবো আজ।তাদের প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া এক দিবসের কথা বলবো আজ ।

২০১০ সালের পাঁচই আগস্ট জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়।

১৯৫২ সালে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানাতে গিয়ে আমাদের তরুণেরা ঢাকার রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিলেন।একুশে ফেব্রুয়ারিতে আমরা গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সঙ্গে স্মরণ করি শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার মাধ্যমে ভাষা শহীদ সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার, শফিউরসহ সবাইকে।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে অনেক তরুণ শহীদ হন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন রফিক, জব্বার, শফিউল, সালাম, বরকত সহ অনেকেই। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবেও চিহ্নিত হয়ে আছে।

তারা প্রাণ দিয়েছিলেন আর রক্ত ঝরিয়েছিলেন বলেই আজ আমরা বাংলাতে কথা বলতে , বাংলা লিখতে পারি ।বাংলা নিয়ে গর্ব করতে পারি ।

বাংলাতে মনের ভাব প্রকাশ করে যেই আনন্দ সেই আনন্দ কী আর অন্য কোনও ভাষায় বলে পাওয়া যাবে?! আমি তো পাইনা । আমার কাছে বাংলা মানে "ভালোবাসি" বলতে পারার অহংকারও বটে !

মানুষের প্রাণ এর বিনিময়ে যে শ্রুতিমধুর ভাষায় কথা বলার অধিকার অর্জন করেছিলাম সেই ভাষাকে ভালো না বেসে কী আর পারা যায় ?!

একুশে ফেব্রুয়ারি , মাতৃভাষা দিবস আর এই দিনে ভাষার জন্য প্রাণ দেওয়া সকল শহীদকে সন্মান দেখা প্রভাতফেরি হয় , মূলত একুশে ফেব্রুয়ারি প্রভাতে গান গেয়ে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর যাত্রা-ই প্রভাতফেরি নামে পরিচিত।

প্রভাতফেরি প্রথমবারের মতো পালিত হয় ১৯৫৩ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি। সব ছাত্র সংগঠনের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে এই দিনটিতে বিশেষ কার্যক্রম পালন করা হয়। প্রভাতফেরির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলো সংগীত। একুশের প্রথম গান রচনা করেন ভাষাসৈনিক আ ন ম গাজীউল হক। গানটির প্রথম চরণ ‘ভুলব না, ভুলব না, একুশে ফেব্রুয়ারি ভুলব না’।বর্তমানে যে গানটি প্রভাতফেরির সমার্থক হয়ে উঠেছে সেই ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি।

বাংলা ভাষা তো আমার ভাইয়ের রক্ত দিয়ে অর্জন করা ভাষা।আমার অহংকার ।আমার গর্ব ।

আজকের মতন বিদায় নিচ্ছি , আমার আজকের লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ , নিরাপদ থাকবেন , আশা করছি ভালো থাকবেন৷